জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ : পরিচিতি

history

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেটের আওতাধীন শায়েস্তাগঞ্জ জহুর চান বিবি মহিলা কলেজটি হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণাঞ্চলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষার একমাত্র স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান। জেলার তিনটি মহিলা কলেজের মধ্যে সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাস রয়েছে এ কলেজের। ২০০৯ সালে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের সাবাসপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আব্দুল কবির নিজের মায়ের নামে গড়ে তুলেন এ কলেজ। ২০০৯ সালে কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়েছে। প্রতিষ্ঠাতা মহোদয়ের সার্বিক সহযোগিতা ও নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ অবধি সুনামের সাথে পরিচালিত হচ্ছে। এ কলেজে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পাঠদান করা হয়।

শায়েস্তাগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে অর্ধ কি.মি. পূর্বে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ গোল চত্বর থেকে অর্ধ কি.মি উত্তরে হবিগঞ্জ-সিলেট সড়কের পুরান বাজার স্টেশন থেকে প্রায় অর্ধ কি.মি. পশ্চিমে পুরান বাজার-শায়েস্তাগঞ্জ সড়ক সংলগ্ন স্থানে গ্রামীণ ও শহরের সমন্বিত প্রাকৃতিক পরিবেশে কলেজটি অবস্থিত।‘নারী শিক্ষার আলোকবর্তিকায় উদ্ভাসিত হউক প্রতিটি গৃহকোণ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ২০০৯ সালের ২১ মার্চ কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়। ২৫ জুলাই ২০০৯ সালে কলেজের প্রথম নির্মিত ভবনের ফলক উম্মোচনও ২০০৯ -২০১০ শিক্ষা বর্ষের আনুষ্ঠানিক পাঠদান কার্যক্রম শুভ সূচনা করেন তৎকালীন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ এমপি।

প্রায় সাড়ে তিন একর ভ‚মি নিয়ে গড়ে উঠেছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। পাকা সীমানা প্রাচীর ঘেরা পাশাপাশি দু’টি পৃথক ক্যাম্পাস রয়েছে কলেজের। প্রতিষ্ঠাতার নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত র্পর্ব পাশের চারতলা ভবনটির নিচতলা ও দ্বোতলা একাডেমিক কাজে এবং তৃতীয় ও চতুর্থতলা ছাত্রী নিবাস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কলেজের পশ্চিম পাশে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ‘আশরাফ উল্লাহ একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনটি ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর উদ্বোধন করা বর্তমানে জহুর চান বিবি মহিলা কলেজে ৭ শতাধিক ছাত্রী অধ্যয়ন করছে এবং কলেজে ৩০ জন শিক্ষক কর্মচারী রয়েছেন। একদল উদ্যমী ও দক্ষ শিক্ষক মন্ডলী দ্বারা গড়ে উঠা এ প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করায় সারা জেলায় এর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ৫টি উপজেলার সংযোগ স্থলে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি একদিন ডিগ্রি ও অনার্স কলেজে রূপান্তরিত হয়ে দেশে নারী শিক্ষায় গৌরব উজ্জল ভ‚মিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করেন ক্ষণজন্মা শিক্ষানুরাগী মুহাম্মদ আব্দুল কবির।

দূরবর্তী ছাত্রীদের জন্য কলেজের রয়েছে একটি ছাত্রী নিবাস। কম খরচে নিরাপদে রুটিন মাফিক পড়াশুনা করার জন্য ছাত্রীনিবাসটি ইতিমধ্যে অভিভাবকদের আস্থা অর্জন করেছে। কলেজের ২ সহশ্রাধিক বইয়ের একটি সমৃদ্ধ পাঠাগার রয়েছে। নটরডেম কলেজের সাবেক অধ্যাপক, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. প্রয়াত আবিদুর রহমান কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।

এ কলেজের দক্ষ-আন্তরিক শিক্ষক মন্ডলী ও কর্মীবর্গ প্রতিটি ছাত্রী ও অভিভাবকগণের সাথে যোগাযোগ সুসংহত ও সুষ্ঠভাবে পরিচালনায় নিবেদিত প্রাণ। পুঁথিগত শিক্ষার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের সীমাবদ্ধ না রেখে জীবন সংগ্রামে জয়ী হবার শিক্ষা দেয়া হয় এখানে। কলেজে সহশিক্ষা কার্যক্রমের জন্য রয়েছে ১৭টি ক্লাব। প্রতি সাপ্তাহের বৃহস্পতিবার ‘সাপ্তাহিক জলসা’ অনুষ্ঠিত হয়। সিসি ক্যামেরাসহ সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রহরী নিযুক্ত রয়েছে। কলেজটি ওয়াইফাই নেটওয়ার্কের আওতায় রয়েছে। কলেজের ছাত্রীরা পরিচয়পত্রসহ নির্ধারিত পোষাক পরে কলেজে। কলেজ ওয়েবসাইট- https://zcbmc.edu.bd/, ফেসবুক পেজ - https://www.facebook.com/zcbmc.shs/ -থেকে কলেজের যাবতীয় তথ্য পাওয়া যায়। কলেজের ই মেইল: zcbmcollegebd@gmail.com

মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের মাধ্যমে জটিল বিষয়গুলি শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে দেয়া হয়। করোনা পরিস্থিতিসহ আপদকালীন সময়ে কলেজ বন্ধ থাকলে অনলাইনে ক্লাস গ্রহণ করা হয়। পিঠা উৎসব এ কলেজের একটি ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান। উপজেলা পরিষদের নিজস্ব মাঠ না থাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে জহুর চান বিবি মহিলা কলেজ মাঠে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন ধরণের মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।কলেজের অভ্যন্তরীণ সব পরীক্ষায় ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক। কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রীদের স্মার্টফোন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। অভিভাবকদের সাথে সময়ে সময়ে মত বিনিময় করা হয়।

ভবিষ্যতে কলেজে কবির কর্ণার,অত্যাধুনিক আইসিটি ল্যাব, শহীদ মিনার, মিলনায়তন, সফটওয়্যার ভিত্তিকি যাবতীয় লেনদেন পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির আলোকে দক্ষ, সৎ, দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমৃদ্ধ মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন বিশ্বনাগরিক করে গড়ে তোলার প্রয়াসে আমরা নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, গভার্নিং বডির সদস্যবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তা, অভিভাবক ও এলাকাবাসী আমাদের সহযোগিতা করে আসছেন শুরু থেকেই।

Scroll to Top